পবিত্র ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে হবিগঞ্জের মাধবপুরে ব্যস্ততা বাড়েনি কামারপাড়াগুলোতে। হাতুড়ি পিটানো টুংটাং শব্দ মুখর নেই কামারপাড়ায়। লোহা পুড়িয়ে লাল করে পিটিয়ে দিনরাত দাড়ালো দা, বটি, ছুরি, চাপাতি তৈরীতে কোন ব্যস্থতা নেই কারিগরদের। এদিকে ঈদের সময় ঘনিয়ে এলেও মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে তেমন বেচাকেনা না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন মাধবপুর বাজারের ব্যবসায়ীরা। তবে পুরনো অস্ত্রগুলোতে চলছে শান দেওয়ার কাজ।
কয়েকজন কামার জানান, বটি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকায়। দা, ছুরি প্রতিটি ৪৫ থেকে ২৭০ টাকা। হাড় কোপানো চাপাতি (স্পিংয়ের) কেজি প্রতি ৪৮০ থেকে ৫৭০ টাকায়, আর সাধারণ লোহার চাপাতির কেজি প্রতি ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তাছাড়াও গরু জবাইয়ের ছুরি ৭৫০ থেকে ৯০০ টাকা এবং ধার দেওয়ার স্টিল প্রতিটি ৪৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পুরনো যন্ত্রপাতি শান দিতে ৭০ থেকে ১৩০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে।
সুলতানপুর গ্রামের কামারপাড়ার গোপাল কর্মকার বলেন, গত ৩৮ বছর ধরে এই পেশায় আছি, প্রতি বছর এ সময় অনেক ব্যস্ত থাকি। দিন যত গড়াবে ব্যস্ততা বাড়বে। এ সময় প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করি, চলবে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত। প্রতিবছরই কাজের ঝামেলায় ঈদের আগের দিন পর্যন্ত অর্ডার ফেরত দিতে হয়। এতে আমাদের আয়ও হয় অনেক। কিন্তু এ বছর করোনা সব থামিয়ে দিয়েছে।
এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, ঈদ মৌসুমে ক্রেতা সমাগম আগের মত বেশি না হওয়ায় কামাররা ইচ্ছেমতো দাম হাঁকাচ্ছেন। অন্য সময়ের তুলনায় প্রত্যেকটা সরঞ্জামের দাম ৮০ থেকে ১২০ টাকা বেশি নিচ্ছেন।
বাজারে আসা ক্রেতা খোকন মিয়া বলেন, এখন প্রত্যেকটা ছুরি এবং বটির দাম বেশি নিচ্ছে, ঈদ আসলেই তারা এমনটা করে।
দাম বাড়ানোর কারণ জানতে চাইলে একজন কামার বলেন, আমরা টিন মেপে কয়লা কিনি। গত বছর কয়লার টিন ৩৫/৪০ টাকা হলেও এবার ৬০/৭০ টাকা। এ ছাড়া গত বছরের তুলনায় এ বছর স্প্রিংয়ের দামও বেশি। করোনার কারণে এবার কোরবানি কম হবে বলে মনে হচ্ছে। এ কারণে আমাদের কাজ, ব্যবসা-বাণিজ্য সব কিছুতেই ভাটা পড়ছে।