ইকবাল হোসেন তালুকদার,নবীগঞ্জ ।।হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলায় অতিরিক্ত পল্লী বিদ্যুৎ বিল দেখে অনেকেই হতভম্ব। এতে উপজেলার অধিকাংশ গ্রাহক ভোগান্তির শিখার।
পল্লী বিদ্যুৎতের অতিরিক্ত বিল দেখে সোশ্যাল মিডিয়াতে আলোচনা সমালচনার ঝড় উঠেছে। এতে অনেকেই ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। বাণিজ্যক মিটার গুলোতে লকডাউনের কারনে দোকান পাট বন্ধ রাখলেও আগের নমুনায় বিল তৈরি করা হয়েছে এবং ডবল বিল তৈরি করা হয়েছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেন।
পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কর্মকতা কর্মচারীর উদাসিনতা ও মনগড়া বিল তৈরির মাধ্যমে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে গ্রাহকদের।
অভিযোগ বিদ্যুৎ সরবরাহ আগের তুলনায় কিঞ্চিত উত্তরণ হলেও প্রকৃত সত্যকে আড়াল করে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার উর্ধ্বে থেকে মে মাসে মনগড়া ভৌতিক বিলের খড়গ চাপিয়ে নানামুখি ভোগান্তিসহ বিদ্যুৎ সমিতির বিরুদ্ধে।
নবীগঞ্জ পৌর একাকার পূর্ব তিমির পুর গ্রামের গ্রাহক মোঃহামদু মিয়ার অভিযোগ,ফেব্রুয়ারি-মার্চ ও এপ্রিল এই তিন মাসের বিল যোগ করে তিন ভাগ করলে গড় বিল হয় ৪৬০ টাকা অথচ মে মাসে অফিসে বসে গড় বিলের নামে আমার বিল করে দিয়েছেন ৯৯০ টাকা।
নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের আউশকান্দি বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও নবীগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি আহমেদ আজাদ বলেন,গত জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের তুলনায় এই মাসে ডাবল বিদ্যুৎ বিল এসেছে।গত মাস গুলায় গড় হিসাব করলে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা কিন্তু মে মাসে ততটা দোকান খোলা হয় নাই তবুও ও ১১ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে। আমার আবাসিক মিটারে ও জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের গড় হিসাব করলে ৩শত থেকে ৪শত টাকা কিন্তু মে মাসের বিল ১৭০০ টাকা। করোনার কারণে বাড়ি আসবে না বলে মিটার না দেখে বিল করেছে পল্লী বিদ্যুৎ, তবে বিলের কাগজ ঠিকই দোকান এবং বাড়ি বাড়ি বিলি করেছে। এটা একটা ধোঁকাবাজি। গড় বিলের নামে ডবল বিল করেছে।
নবীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী আহমদ রাজু বলেন,২ মাস ২০ দিন দোকান বন্ধ রাখার পর বিদ্যুৎ বিল দুই মিটারে ২৭০০০ হাজার টাকা বিল আসে। পরে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করলে বিলের পরিমান ৯৮০০ টাকা দাবি করা হয়।
সচেতন মহল বলছেন, এ যেন গোদের ওপর বিষফোঁড়া, একদিকে করোনা সংকট মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত লকডাউন বা সাধারণ ছুটিতে কর্মহীন ঘরবন্দি মানুষের আর্থিক ও খাদ্য সংকটে জীবন-জীবিকা নাভিশ্বাস। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ বিলে বিলম্ব মাসুল মওকুফসহ গ্রাহকদের ভোগান্তি কমাতে সরকারি নির্দেশনাকেও মানছেন না। গড়বিলের কথা বলে দ্বিগুন বা তিনগুন বেশি ভৌতিক বিলের বোঝা গ্রাহকের ঘাড়ে চাপিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষ।সময়মতো বিল পরিশোধে ব্যর্থ হলেই লাইন বিচ্ছিন্ন করবে এবং পুনঃসংযোগ দেওয়ার সময় গ্রাহকের আর্থিক ক্ষতির সঙ্গে ভোগান্তিও রয়েছে।সীমাহীন এই ভোগান্তি ও আর্থিক ক্ষতির প্রতিকার চায় সংশ্লিষ্ট বিভাগের উর্ধ্বতন মহলের কাছে।
এছাড়া এসব ভুতুড়ে বিল সংশোধন করতে নবীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অফিসে এসেও হয়রানির শিকার হন গ্রাহকরা। সেইসঙ্গে সমিতির ভুল হওয়া সত্ত্বেও ডুপলিকেট ফি বাবদ কেটে নেওয়া হয় টাকা। সেইসঙ্গে অদৃশ্য কারণে ডিমান্ড চার্জের নামেও নেওয়া হয় অতিরিক্ত টাকা। গ্রাহকদের বছরের পর বছর মিটার ভাড়াও দেওয়া লাগে এমন অভিযোগের পাহাড় রয়েছে এ সমিতির বিরুদ্ধে।
নবীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার এজিএম রুহুল আমীন বলেন,করোনাকালে সরকারি নির্দেশনায় গড় বিল করা হয়েছে।তবে ভৌতিক বিল করে গ্রাহকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেন এই কর্মকর্তা।গত মাস গুলার তুলনায় মে মাসে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়েছে বেশি তাই বিল বেশি।