নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পরগনার পানিউমদা ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামে পাহাড় কাটা চলছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) গভীর রাতে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের ঝটিকা অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় পাহাড় কাটায় জড়িত ৪ জনকে আটক এবং ৩টি ট্রাক্টর ও একটি এক্সেভেটর মেশিন জব্দ করা হয়েছে। পরে আটককৃতদের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে জেল ও জরিমানা প্রদান করা হয়। এ অভিযানে নেতৃত্ব দেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন।
জানা যায়- নবীগঞ্জ উপজেলার দিনারপুর পরগনা একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করলেও পাহাড়খেকোদের করাল গ্রাস থেকে রক্ষা পাচ্ছে না। হাইকোর্টের পাহাড় সংরক্ষণ করার নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুল দেখিয়ে পাহাড় কাটায় মেতে উঠেছেন একদলভুক্ত অসাধু ব্যক্তি।
সম্প্রতি উপজেলার দিনারপুরের পানিউমদা ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামের লুৎফুর রহমান নামে এক ব্যক্তি অবৈধভাবে রাতের আধারে পাহাড় কেটে উজাড় করছিল। পাহাড়ি মাটি দিয়ে নিকটবর্তী স’মিলের জায়গা ভরাট করা হচ্ছিল।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন নেতৃত্বে ও গোপলার বাজার তদন্ত কেন্দ্রের এস আই মাজহারুল ইসলাম সহকারে একদল পুলিশ পানিউমদা এলাকার বড়গাঁও গ্রামে অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযানকালে তিনজন ট্রাক্টর চালকসহ ৪ জনকে আটক করা হয়। অভিযানে আটককৃতরা হলেন, ট্রাক্টর চালক সুমন আহমেদ, নাঈম মিয়া, রুবেল মিয়া ও আব্দুর রহমান। এ সময় পাহাড় কাটায় ব্যবহৃত তিনটি ট্রাক্টর ও একটি পাহাড় কাটার মেশিন এক্সেভেটর জব্দ করা হয়। শুক্রবার ভোর পর্যন্ত চলে এ অভিযান। অভিযান চলাকালে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
রাতেই অভিযানে নেতৃত্বদানকারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মহিউদ্দিন ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী ট্রাক্টর চালক সুমন, রুবেল ও নাঈমকে তিন মাস করে বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং আব্দুর রহমানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং ৫০ হাজার টাকা (অনাদায়ে আরও দুই মাসের জেল) অর্থদন্ডের নির্দেশ দেন।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মহিউদ্দিন অভিযানের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পাহাড় খেকোদের ধরতে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। যে বা যারা, যত ক্ষমতাধর, প্রভাবশালী হউক, সরকারি সম্পত্তি রক্ষায় প্রশাসন কঠোর অবস্থানে থাকবে। জব্দকৃত একটি এক্সকেভেটর (লরি সহ) এবং ৩ টি ট্রাক রাষ্ট্রীয় খাতে বাজেয়াপ্ত করে বিধি মোতাবেক নিলামে বিক্রয়ের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি (এসি ল্যান্ডকে আহবায়ক, থানার ওসি, উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার, উপজেলা কৃষি অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট ইউ পি চেয়ারম্যানকে সদস্য) কে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।