বিশ্বব্যাপী করোনার প্রকোপ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু হলেও এখনো নিয়ন্ত্রনে আসে নি করোনার প্রভাব। দেশে দিন দিন বাড়ছে করোনার সংক্রমণ। সংক্রমণের পাশাপাশি মৃত্যুর হার বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। করোনার সংক্রমণ রোধে চলছে সরকার ঘোষিত সর্বাত্মক লকডাউন। এ লকডাউনেঘ নবীগঞ্জ উপজেলায় চরম সংকটে পড়েছে কাপড় ব্যবসায়ী ও নিম্নআয়ের মানুষ জন। গত বছরের মার্চে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও হানা দেয় অদৃশ্য ভাইরাস কোভিড-১৯। মার্চের শেষ সপ্তাহে শুরু হওয়া লকডাউন স্থায়ী হয় কয়েক মাস। স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো পৃথিবী। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির আঘাতে বিদায় নিতে থাকে একের পর এক প্রিয় মুখ। এর মধ্যেই পালিত হয় ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, দূর্গাপূজাসহ বড় বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। লকডাউনের মুখে পড়ে বছরের বড় একটা সময় বন্ধ ছিল দোকানপাট। ফলে কিঞ্চিৎ পরিমাণও বিক্রি করতে পারে নি ব্যবসায়ীরা।গত বছরের শেষ থেকে পরিবেশ একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করায় নতুন করে আশায় বুক বাঁধে ব্যবসায়ীরা। আসন্ন রমজান ও ঈদুল ফিতরের ক্ষণ গণনাও শুরু করেছেন অনেকেই। প্রস্তুতিস্বরূপ মালামাল এনেছেন বেশির ভাগ ব্যবসায়ী। প্রস্তুতি চলছিল নতুন উদ্যমে দোকান সাজানোর। এতো আয়োজনের মাঝে আবারও হানা দিয়েছে করোনা। অনাকাঙ্খিত অতিথির মতো এসে আবারও জীবনের চাকা রোধ করে বৈশ্বিক মহামারী ভাইরাসটি। এ বছরের মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে ক্রমেই বাড়তে থাকে করোনা সংক্রমিত রোগী ও মৃত ব্যক্তির সংখ্যা। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছে সাড়ে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার লোক। মৃত্যুবরণ করছে প্রতিদিনই ১শত এরও অধিক সংক্রমিত রোগী। এমন পরিস্থিতিতে শনিবার (৩ এপ্রিল) নতুন করে লকডাউনের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রাথমিক অবস্থায় সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে এক সপ্তাহ লকডাউন। সোমবার (১৯ এপ্রিল) মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।বুধবার (২১ এপ্রিল) থেকে টানা এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে চোখে অন্ধকার দেখছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানপাট খোলা রাখার কোনো রকম অনুমতি না পাওয়ায় মাথায় হাত দিয়েছেন কাপড় ব্যবসায়ীরা। উপায় না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দোকান মালিকরা। এবার ঈদেও বিক্রির উপায় না পেয়ে কর্মচারীদের মুখেও হতাশার প্রতিচ্ছবি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ঋণ নেই এমন মানুষ সমাজে খুঁজে পাওয়া দায়। সেটা ১ টাকা হোক বা লাখ টাকা। মানুষের জীবনে ঋণ একটা বড় সমস্যা। ঋণে জর্জরিত জীবনে কোনও সুখ আর অবশিষ্ট থাকে না। সকাল-বিকেল পাওনাদারের মুখোমুখি হতে হয়। আর পেটের জ্বালা কোটিপতিরও থাকে। পেটে বুক লাগলে কোন কিছু না খেলে পেটের জ্বালা কমে না। কিছু খেতে হলে টাকা দরকার। টাকা না থাকলে কোথাও কিছু পাওয়া যায়না। নবীগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয় তারা বলেন, ঈদে ভালো বিক্রির আশায় নতুন মালামাল কিনেছেন তারা। হঠাৎ লকডাউন ঘোষণায় দিশেহারা হয়েছেন দোকানীরা। এবারের ঈদেও বিক্রি করতে না পারলে বিশাল লোকশান হবে বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন তারা।