মাধবপুর প্রতিনিধি : তিন দিনের নানা নাটকিয়তার পরও অবশেষে ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী লোকমান মিয়ার লাশ ফেরত দিয়েছে বিএসএফ। শুক্রবার (২৯ মে) সন্ধ্যায় ৩য় দফায় বিজিবি-বিএসএফের পতাকা বৈঠক শেষে গরু চুর সন্দেহে ভারতীয় নাগরিকদের হাতে নিহত এই যুবকের লাশ হস্তান্তর করা হয়। হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন-৫৫ বিজিবির সহকারী পরিচালক নাসির উদ্দিন চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন- নিহতের পরিবার ও আমাদের দাবি অনুযায়ী ময়নাতদন্তের কপিসহ যাবতীয় কাজপত্রসহ লাশ হস্তান্তর করায় আমরা লাশ গ্রহণ করেছি। এর আগে গত বুধবার( ২৭ মে)) ও বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুই দফায় বিএসএফে এর সঙ্গে বিজিবি’র পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হলেও বিভিন্ন অজুহাতে সুরতহাল রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন সহ যাবতীয় কাগজপত্র ছাড়া লাশ হস্তান্তর করতে চায় বিএসএফ। ফলে বিজিবি ও নিহতের পরিবার লাশ গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানায়। উল্লেখ্য যে, গত রবিবার ( ২৪ মে) হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ধর্মঘর ইউনিয়নের মালঞ্চপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাসিমের ছেলে লোকমান মিয়া তার ফুফুর বাড়ি ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মোহনপুর যাওয়ার জন্য অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে। এ সময় ভারতের সীমান্তবর্তী গোপালনগর গ্রাম অতিক্রমের সময় স্থানীয় লোকজন তাকে করোনা রোগী ভেবে আটক করে গণপিটুনি দিয়ে বাংলাদেশ সীমান্তের অদূরে একটি জঙ্গলে ফেলে রেখে যায়।পরে খবর পেয়ে পশ্চিম ত্রিপুরা রাজ্যের সিধাঁই থানা পুলিশ গুরুতর আহত অবস্থায় লোকমান মিয়াকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সংবাদটি ভারতীয় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নিহতের পরিবার জানতে পেড়ে বিজিবি কে অবহিত করে। পরে বুধবার বিকালে ১৯৯৪/৪ এস পিলারের নিকট বাংলাদেশের মোহনপুুুর নামকস্থানে বিজিবি-বিএসএফ এর মধ্যে প্রথম দফায় পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ভারতীয় পুলিশ ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল রিপোর্টসহ যাবতীয় কাগজপত্র ছাড়াই লাশ হস্তান্তর করতে চায়। কিন্তু নিহতের পরিবার ও বাংলাদেশের বিজিবি-পুলিশের প্রতিনিধিরা এসব কাগজপত্র ছাড়া লাশ গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়।পরদিন বৃহস্পতিবার আবারও দুই পক্ষের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এ সময়ও ভারতীয় পুলিশ যাবতীয় কাগজপত্র ছাড়া লাশ হস্তান্তরের চেষ্টা করে। অবশেষে শুক্রবার বিকেলে তৃতীয় দফায় পতাকা বৈঠকে বসে বিজিবি ও বিএসএফ। এসময় সুরতহাল রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন সহ যাবতীয় কাগজপত্র দেয়ায় লাশ গ্রহণ করে বিজিবি ও নিহতের পরিবার।