প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে ফসল ঘরে তোলা কৃষকদের কাছে নতুন কোনও ঘটনা নয়। তবে গেল বোরো মৌসুমে শিলাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহতা এতটা বেশি ছিল- চোখের সামনে পাকা ধান নষ্ট হয়ে যেতে দেখা ছাড়া করার কিছুই ছিল না তাদের। এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবিগঞ্জের মাধবপুরের ১১টি ইউনিয়নের কৃষকরা ব্যাপক রোপা ও বোনা আমনের চাষাবাদ করেছেন।
কৃষক ওয়াহাব মিয়া জানান, আমনের এ মৌসুমে অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত থাকেন তারা। কারণ এ সময় নেই শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড় অথবা আগাম বন্যার ভয়। এ বছর আমন চাষাবাদের জন্য প্রকৃতি অনুকুলে রয়েছে। সবকিছু মিলিয়ে এবার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান কৃষকরা।
উপজেলার পূর্ব মাধবপুর এলাকার মোহন মিয়া বলেন, এবার তিনি অন্য বছরের তুলনায় দ্বিগুন জমি চাষ করেছেন। এ পর্যন্ত আশানুরূপ ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মুরাদপুর গ্রামের কৃষক এরশাদ আলী জানান, সঠিক সময়ে মাঠ থেকে পানি নেমে যাওয়ায় এ বছর বেশি জমি রোপন করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়াও নিয়মিত কয়েকবার বৃষ্টি হওয়ার কারণে অন্যান্য বছরের তুলনায় অন্তত দেড়গুণ ফলনের আশা করছেন তিনি।
মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, গত বছর উপজেলার রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা ৬ হাজার হেক্টর ধরা হলেও এর চেয়ে অনেক কম জমি রোপন করা হয়েছিল। তবে এবার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ৫৫০ হেক্টর। কিন্তু চাষ হয়েছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৯ হাজার হেক্টর। বোনা আমন চাষাবাদ হয়েছে সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর।
তিনি আরো জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার পরিবেশের ছিল অনূকুল অবস্থান। তাই কৃষকরা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে বেশি জমি চাষ করেছেন। তাছাড়া সঠিক সময়ে জমিতে সার এবং কীটনাশক প্রয়োগ করায় আক্রমন করতে পারেনি পোকা। এছাড়াও সরকারি প্রশিক্ষণ মতে কৃষকরা জমিতে সুষম সারের সঠিক প্রয়োগ করেছেন। সবকিছু মিলিয়ে এবার বাম্পার ফলনের আশা করা যায়।