হবিগঞ্জের মাধবপুরে যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন করার ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে, হবিগঞ্জর মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নের আয়লাবই গ্রামে।
মামলা সুত্রে জানা যায়, আয়লাবই গ্রামের মৃত মস্তু মিয়ার ছেলে মোঃ মতি মিয়া ধর্মীয় বিধান মতে বিয়ে করেন আয়লাবই গ্রামের মৃত আব্দুল মন্নাফ মিয়ার মেয়ে মোছাঃ আজিদা বেগমকে। বিয়ের পর ভালভাবেই সংসার চলছিল। বিয়ের কিছুদিন পর আজিদা বেগমকে তার স্বামী মতি মিয়া গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে দুবাই পাঠিয়ে দেন। দুবাইয়ে ৫ বছর থেকে আজিদা বেগম দেশে চলে আসেন।
দুবাই থাকার সময় সব টাকা স্বামীর কাছে প্রেরণ করেন। দেশে আসার পর তাদের দুইটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ছোট মেয়ের বয়স যখন ৯ মাস তখন তার স্বামী তাকে গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে পুনরায় জর্ডান পাঠিয়ে দেন। সেখানে আজিদা ২ বছর থাকে এবং উপার্জিত টাকা স্বামীর কাছে প্রেরণ করেন।
২ বছর পর আজিদা দেশে ফিরে আসলে তার স্বামী মতি মিয়া গৃহকর্মীর কাজ দিয়ে তাকে আবার কাতার পাঠান। সেখানে আজিদা ৩ বছর যাবত করে উপার্জিত টাকা স্বামীর কাছে প্রেরণ করেন। ৩ বছর পর আজিদা দেশে ফিরে আসেন।
দুবাই, জর্ডান, কাতার ৩ দেশ মিলিয়ে প্রায় ১০ বছর আজিদা বেগম বিদেশ গৃহকর্মীর কাজ করে স্বামীকে ২৯ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাতে মতি মিয়ার মন ভরেনি। দেশে ফিরে আসার পর আরো টাকা দিবার জন্য মতি মিয়া আজিদার উপর নির্যাতন শুরু করেন। এই নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আজিদার পারিবারিক বিরোধ দেখা দিলে এলাকার স্থানীয় লোকজন সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেন।
স্থানীয়দের সিদ্ধান্তমতে স্বামীর বাড়িতে আলাদা গৃহ নির্মাণ করে ২ মেয়েকে নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। তখনো স্বামী মতি মিয়া ২ লাখ টাকা দিতে আজিদা বেগমকে চাপ দিতে থাকেন। আজিদা বেগম টাকা দিতে অস্বীকার করলে গত ১০ অক্টোবর সকালে মতি মিয়া ও তার অপর স্ত্রী ছায়েদা বেগম মিলে আজিদা বেগমকে মারপিট করে আহত করেন।
এ ঘটনায় আজিদা বেগম গত ১২ অক্টোবর হবিগঞ্জ নারী শিশু নির্যাতন দম ট্রাইব্যুনাল-৩ এ একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে মাধবপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তক্রমে প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু আসাদ ফরিদুল হক জানান, তদন্ত করে বিজ্ঞ আদালতকে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।