মাধবপুর ( হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় হাত বাড়ালেই মিলছে মাদক। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির সত্বেও উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতে খুব সহজেই মিলছে মাদকদ্রব্য। মাধবপুর উপজেলার কয়েকটি মাদকের হটস্পটের মধ্যে সীমান্তবর্তী তেলিয়াপাড়া চা বাগান অন্যতম। এখানে রয়েছে মুক্তিযুদ্ধের ২, ৩ ও ৪ নং সেক্টরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্বরণে নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভ বুলেট। এখানে সংগঠিত হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রথম সামরিক সভা এবং এখান থেকেই শুরু হয়েছিল সুসংগঠিত প্রতিরোধ যুদ্ধ। তাই প্রতিদিন শতশত পর্যটক ঐতিহাসিক এই স্থানটিকে দেখতে আসেন। আর এই সুযোগে এখানে মাদকসেবীরা চলে আসে মাদক সেবনের জন্য। মাদক চোরাকারবারিরা অভিনব কৌশলে এখানে মাদক সরবরাহ করে। মাদক সরবরাহের জন্য ব্যবহার করা হয় স্কুল কলেজের ছাত্র উঠতি বয়সী কিশোরদের। স্মৃতিস্তম্ভ এলাকার লেকের ঘাটলায় গোসলের জন্য অথবা আশপাশের চা বাগান এলাকায় রাখাল সেজে গরু নিয়ে অপেক্ষা করে এ-সব উঠতি বয়সী কিশোর।মাদকসেবি পর্যটকদের দেখলেই তারা চিনতে পারে। তাদের আসেপাশে ঘুরাঘুরি করে। মাদকসেবীরা তখন তাদের সাথে কথা বলে। কথাবার্তা বলে যখন নিশ্চিত হয় এরা আসলেই মাদক সেবনের উদ্দেশ্যে এসেছে,তখন শুরু হয় দরকষাকষি। দরদাম ঠিক হলে পাইকারী মাদক বিক্রেতার কাছে থেকে এনে সরবরাহ করা হয় চাহিদা মতো মাদক। এখানে ভারতীয় ফেনসিডিল বেশি বেচাকেনা হয় বলে জানা গেছে। বর্তমানে একেকটি ফেনসিডিল সাড়ে ৮শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বেশি বেশি কিনলে পাইকারী মূল্য প্রতি পিস ৬শ থেকে সাড়ে ৬শ টাকায় পাওয়া যায়। মাদক বেচাকেনা করতে গিয়ে অনেক সময় এসব কিশোর প্রশাসনের হাতে আটক হলেও পাইকারি বিক্রেতা বা গডফাদাররা অদৃশ্য খুঁটির জোরে বারবারই থেকে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। একটি সূত্র জানায়, তেলিয়াপাড়া চা বাগানের বড়ো মাদক চোরাকারবারি ও গডফাদাররা কখনো চা বাগানের বাইরে বের হয় না। বাগানে প্রবেশের প্রতিটি রাস্তায় আছে চেকপোস্ট। ফলে চেকপোস্ট দিয়ে প্রশাসনের লোকজন প্রবেশ করার সাথে সাথেই খবর পৌঁছে যায় গডফাদারদের কাছে।ফলে পুলিশ, ডিবি কিম্বা অন্য কোন বাহিনী অভিযানে আসলে মাদক সহ গডফাদাররা নিরাপদ স্থানে চলে যায়। এতে করে মাদক বিরোধী অভিযানের সফলতা চুনোপুঁটিদের আটকের মধ্যেই সীমাবদ্ধ আছে।