শায়েস্তাগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ করোনা প্রতিরোধে সারাদেশে চলছে লকডাউন। সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী যাত্রীবাহী পরিবহনগুলো বন্ধ রয়েছে। তবুও হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জে থেমে নেই মানুষের চলাচল। কেউ রিকশায়, কেউ সিএনজি অটোরিকশায়, আবার কেউ বাইকে করে ছুটে চলেছেন। এদিকে যাত্রীবাহী যান না চলার কারণে গত মাসখানেক ধরে শায়েস্তাগঞ্জের প্রায় ফাঁকা রাস্তায় জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে রাইড শেয়ারিং। এখনও হবিগঞ্জ তথা শায়েস্তাগঞ্জে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবা পাঠাও ও উবার চালু হয়নি। তবে শায়েস্তাগঞ্জের কিছু যুবক নিজস্ব বাইকে একজন-দুইজন করে যাত্রীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন, বিনিময়ে আয় করছেন টাকা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার অলিপুর এলাকায় শনিবার (১৬ মে) রাইড শেয়ারিং করছেন মো. শোয়েব মিয়া। তার পরনে পিপিই, পকেটে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাথায় হেলমেট। যথেষ্ট নিরাপত্তা বজায় রেখে তিনি হবিগঞ্জে যাত্রী পৌঁছে দিয়ে ভাড়া নিচ্ছেন জনপ্রতি ২০০ টাকা। এভাবে সেবা দিয়ে তিনি দিনে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা আয় করছেন।
শায়েস্তাগঞ্জের নতুন ব্রিজ পয়েন্টে রাইড সেবা দিচ্ছেন মো. এখলাছ মিয়া। তিনি নতুন ব্রিজ থেকে হবিগঞ্জে যাত্রী নিচ্ছেন ১০০-১২০ টাকা ভাড়ায়।যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও মোটরসাইকেলের কাগজপত্র ঠিক আছে, তারাই মূলত এভাবে কিছুটা হলেও এই লকডাউনে আয় করতে পারছেন। অনেকেই আবার অতিরিক্ত আয়ের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলাতেও লোক পৌঁছে দিচ্ছেন। এই করোনার সংক্রমণকালে তাদের এ কাজে ঝুঁকি বেশি। বাইকের পেছনে বসিয়ে একজন-দুইজন যাত্রী বহন করলেও যাত্রীদের নেই তেমন সুরক্ষার সরঞ্জামাদি। ফলে ভাইরাস ছড়ানোর ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। তবু জরুরি কাজে বের হওয়া মানুষ তাড়াতাড়ি গন্তব্যে যাওয়ার আশায় অতিরিক্ত টাকা দিয়ে রাইড শেয়ারিং সেবা নিচ্ছেন।শায়েস্তাগঞ্জের বাসিন্দা মো. সুজাত আহমেদ বলেন, এই লকডাউনে হবিগঞ্জেও অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং চালু করা হলে ভালো হতো। এত করে জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া মানুষ সহজেই গন্তব্যে যেতে পারত।
রাইডার মো. মাসুক মিয়ার নিজের বাইক নেই। তিনি আরেকজনের কাছ থেকে ভাড়ায় বাইক নিয়ে এসে সেবা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, সবসময় যাত্রী পাওয়া যায় না। তবে কোনো কোনো দিন ভালোই আয় হয়। কিছু একটা করে তো খেতে হবে। তাই ঝুঁকি নিয়েই কোনোভাবে চলার ক্ষুদ্র চেষ্টা করছি।